হাটহাজারী উত্তর চট্টগ্রামের এক ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এক ঐতিহাসিক ঘটনার প্রেক্ষিতে হাটহাজারীর নামকরণ করা হয়। এর পূর্ব নাম ছিল আওরঙ্গবাদ। বর্তমান হাটহাজারী, উত্তর রাউজান ও ফটিকছড়ি নিয়ে আওরঙ্গবাদ গঠিত। আওরঙ্গবাদ পরগনায় চট্টগ্রামে মোগল শাসনাধীন হওয়ার পর থেকেই মসনদধারী প্রথা চালু করে বারজন হাজারীকে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছিল। আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার কারণে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার মুর্শিদাবাদের নবাবের আদেশ অমান্য ও অগ্রাহ্য করে হাজারীগণ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করতে থাকেন এবং নবাবের বিরুদ্ধাচরণ করেন। চট্টগ্রামে নবাবের প্রতিনিধি মহাসিংহ হাজারীগণের ক্ষমতা খর্ব করতে এক কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রতারণা করে সীতাকুন্ডে নবাবের কাচারিতে দাওয়াত নিয়ে যান। তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করে আটজন হাজারীকে বন্দি করতে সমর্থ হন। বারজন হাজারীর মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের দুইজন নবাবের বশ্যতা স্বীকার করায় তাঁদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকি দশজনের মধ্যে আটজনকে বন্দি অবস্থায় মুর্শিদাবাদের নবাবের দরবারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। দুইজন হাজারী পালিয়ে প্রাণরক্ষা করেন। মুর্শিদাবাদের নবাব আটজন হাজারীকে লোহার পিঞ্জরে বন্দি করে গঙ্গা নদীতে ডুবিয়ে হত্যার আদেশ দেন। ফলে উত্তর চট্টগ্রামে হাজারীদের ক্ষমতা খর্ব হয়ে পড়ে। বেঁচে যাওয়া হাজারীদের মধ্যে বীরসিংহ হাজারী যে হাট প্রতিষ্ঠা করেন তাকেই আজকের হাটহাজারী বলা হয়। তখন ফারসি ভাষা প্রচলন ছিল বলে এই হাটটি “হাটে হাজারী” বা “হাটহাজারী” নামে পরিচিতি লাভ করে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস