শিক্ষা সংস্কৃতিতে আবহমান কাল থেকে যেমন হাটহাজারী সমৃদ্ধ ঠিক তেমনি খেলাধুলায়ও এই উপজেলার একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। দেশজ খেলাধুলার পরিবর্তে ভিনদেশী খেলা এখন আমাদের সন্তানদের কাছে অতি প্রিয়। লালন, হাছান, মুকন্দ দাসের গান এখন আর যেমন শোনা যায় না তেমনি চোখে পড়ে না হা-ডু-ডু, দাড়িয়াবান্দা, কানামাছি খেলা। একসময় গাঁ-গ্রামে বলি খেলা নিয়ে অনেক মাতামাতি, নাচানাচি হতো, এক গাঁয়ের বলির সাথে অন্য গাঁয়ের বলির খেলা শুধু খেলা ছিল না, ছিল দু’গাঁয়ের মান-ইজ্জতের বিষয়। হা-ডু-ডু, দাড়িয়াবান্দা,কানামাছি, বাঘবন্ধী, লাঠি খেলা কিংবা সাঁতার, নৌকা বাইচ, গোল্লাছুট, ডাংগুলি, মোরগ লড়াই, ঘুঁড়ি উড়ানো, কবুতর খেলা এসবই পূর্ব পুরুষের স্মৃতির সাথে জড়ানো। আষাঢ়ের বাদল দিনে গৃহকোণে ষোলগুটি খেলার স্মৃতি আজও অনেক বৃদ্ধের মনে দোলা জাগায়। ইংরেজ প্রবর্তিত ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাটমিন্টন খেলার দাপটে আমরা হারিয়ে ফেলছি এইসব সোনালী দিনের জনপ্রিয় খেলাগুলো। সারাদেশে ক্রিকেট খেলার জনপ্রিয়তার সূত্র ধরে হাটহাজারীতে আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে ক্রিকেটের আয়োজন শুরু হয়। হাটহাজারীর সর্বত্র তরুণ যুবকেরা এখন ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি করছে। ফুটবল খেলার সাথে হাটহাজারীর হৃদয়ের সম্পর্কটা অনেক দিনের পুরানো। হাটহাজারীর এমন কোন খেলার মাঠ নেই যেখানে ফুটবল খেলা বসত না। সে সব মাঠে এখনো টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে দর্শক সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। হাটহাজারীতে অসংখ্য ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান খেলাধুলা আয়োজন ও ক্রীড়ার বিকাশে অসামান্য অবদান রাখছে। চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলাকে নিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত আন্তঃউপজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের ৪ আসরের মধ্যে হাটহাজারী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ৩ আসরের (২০০৩, ২০০৬, ২০১০) চ্যাম্পিয়ান হওয়ার দুর্লভ মর্যাদা লাভ করেছে হাটহাজারীর ফুটবলের একছত্র আধিপত্যের ইঙ্গিত বহন করে। আবার মেট্রোপলিটন কিশোর লীগেও ২০০৭ সালে হাটহাজারী খেলোয়াড় সমিতি রানার আপ ট্রপি লাভ করে। তাই বর্তমান সময়কে ক্রীড়াবোদ্ধারা সাফল্যের বিচার স্বর্ণযুগ বলে অভিহিত করেন। ১১তম এসএ গেইমস ও ৮ম কমনওয়েলথ গেইমসের ১০ মিটার ইয়ার রাইফেলসে স্বর্ণজয়ী (দলগত) বাংলার কনিষ্ঠ স্বর্ণকণ্যা সৈয়দা সাদিয়ার জন্ম হাটহাজারীর মাদার্শা ইউনিয়নে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস