কৃষি :
ওপারেতে লংকা গাছটি লাল টুক টুক করে, গুণবতী ভাই আমার প্রাণ কেমন করে। চট্টগ্রামের মরিচের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। ঐ মরিচের আকার, রং ও স্বাদে খুবই অতুলনীয়। হাটহাজারীর হালদা নদীর তীরে নাজিরহাট থেকে সাত্তার ঘাট পর্যন্ত এলাকায় প্রচুর মরিচ জন্মে। মরিচ উৎপাদনে মেখল, জাফরাবাদ, ছিপাতলী, ধলই, নাঙ্গলমোড়া ও ফরহাদাবাদ প্রধান এলাকা। মরিচ ছাড়াও ধনিয়া, পিয়াজ, বাদাম, আখ, তরমুজ, শশা, সরিষা, কলই, ফেলন প্রভৃতি উৎপাদিত হয়। হাটহাজারী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে মধ্য পাহাড়তলী ও দেওয়াননগর এলাকার পাহাড়ে আদা, রসুন, পিয়াজ, হলুদ, তেজপাতা, দারুচিনিসহ, কলা, নারিকেল, আনারস,সুপারী, জলপাই ইত্যাদির চাষ করা হচ্ছে। হাটহাজারী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন জাতের বিভিন্ন বীজ উৎপাদন করে এবং দশ হাজার জাতের বীজ সংরক্ষণ করে।
বস্ত্র :
সারা চট্টগ্রামের মধ্যে হাটহাজারী বস্ত্রশিল্পে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আসছিল। ১৯৬০ সাল হতে বস্ত্রশিল্পের পতনের সূত্রপাত। চট্টগ্রাম বস্ত্র মিল প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাটহাজারী গ্রামে গ্রামান্তর, বাড়ি-বাড়ি প্রতিষ্ঠিত তাঁত শিল্পের অবনতি হতে থাকে। হাটহাজারীর খন্দকীয়ার যোগীর হাট, যোগীপাড়া, উত্তর মাদার্শা, বাড়ীঘোনা, ফতেপুর মাইজপট্টির যোগীপাড়া, ফরহাদাবাদ, গুমানমর্দ্দন, এলাকার যোগী ও তাতীগণ কাঠের ও বাঁশের তৈরী তাঁতে নানা প্রকার কাপড়, ধুতি,গামছা, শাড়ি প্রস্তুত করতেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ছড়ারকুল, ফতেপুর, মেখল, নন্দীর হাট ও হাটহাজারীতে প্রচুর তাঁত শিল্প সরকারি মদদে স্থাপিত হয়। এসব তাঁতে উন্নতমানের শাড়ি- লুঙ্গী প্রস্তুত হতো। কালের করাল গ্রাসে এসব শিল্প হারিয়ে গেছে।
অন্যান্য শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্য :
হালদা নদীর মুখে ১৯৬০ খ্রি: পর্যন্ত মদুনাঘাট গইন্যামার হাটে প্রচুর শুটকি উৎপন্ন হতো। বাঁশখালীর লোকেরা গদুনা নৌকা করে প্রচুর শুটকি ও লবণ হালদা নদী হয়ে খালের মধ্যে প্রবেশ করে বেচাকেনা করত। বাঁশ, বেত ও পাটিপাতার তৈরী কুটিরশিল্পের জন্য হাটহাজারী বিখ্যাত ছিল। হাল চাষের জন্য লাঙ্গল জোয়াল, ইত্যাদিতে কাঠ পাহাড়ে উৎপন্ন হতো। হাটহাজারীতে কুটিরশিল্পের বিশেষতঃ লাঙ্গল জোয়াল তৈরির জন্য বিখ্যাত ছিল - ফতেপুর, পাহাড়তলী ও খন্দকীয়া। সুপারী উৎপাদনে - ফতেপুর, ফতেয়াবাদ,চন্দ্রকোনা ও মেখল। বাঁশ বিক্রির জন্য ফরহাদাবাদ, বাংশাল, ফতেপুর, বানশাল, মদুনাঘাট, রামদাশহাট, কুমারখীল, সাত্তার ঘাট। হালের গরু, কোরবানীর জন্য হাটহাজারী, ইসলামিয়া হাট, সুদূর ইংরেজ ও পাকিস্তান আমলে নামকরা বাজার ছিল। কোরবানী গরুর জন্য ফতেয়াবাদ এখন উত্তর চট্টগ্রামে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। মির্জাপুরে প্রচুর মুড়ি উৎপাদন করে শহরে ট্রাক ভর্তি পাঠান হতো। বর্তমান সে ঐতিহ্য নাই। ফতেয়াবাদ চৌধুরী হাটে আধুনিক মুড়ি প্রস্তুতের কারখানা স্থাপিত হওয়ায় মির্জাপুরের মুড়ির ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস